কোটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি : ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর রেলওয়ে ষ্টেশনের দুই পাশে গড়ে ওঠা অবৈধ স্হাপনা উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, রেলপথের পাশের বস্তি গুলো থেকে পাথর নিক্ষেপ করায় এ সিদ্ধান্ত উচ্ছেদের জন্য মাইকিং করা হয়েছে বলা হয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব জায়গা খালিকরে দিতে এদিকে হঠাৎ এ সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েছেন লাইনের পাশে বসবাস করা শতাধিক পরিবার রেললাইন দখল করে বসবাস করা রাশেদা খাতুন বলেন,

‘৩০ থেকে ৩৫ বছর আগে এখানে আসি। খালি জায়গা পড়ে ছিল। তাই একজনরে ধরে এখানে ঘর করে বসবাস করছি। আমরা জানতাম, হয়তো একদিন উঠে যেতে হবে। তবে সেই দিন যে এত তাড়াতাড়ি আসবে তা বুঝতে পারিনি। গরিব মানুষ, অনেক কষ্ট করে তিল তিল করে গড়ে তোলা এ সংসার। হঠাৎ ফেব্রুয়ারির ১০ তারিখে রেলের অফিসাররা এসে বলেন, সামনের মাসের (মার্চ) ১০ তারিখের মধ্যে জায়গা খালি করে দিতে।

এরপর থেকে খাওয়া-ঘুম বন্ধ। এত কম সময়ে কোথায় যাব, আর কী করব তা ভেবে দিন কাটছে। আর মাত্র দুই দিন বাকি রয়েছে, জায়গা খালি করে দেওয়ার।’ রাশেদা আরও বলেন, ‘কয়েক দিন আগে মেয়র সাহেব এসেছিলেন। ওনাকে বলেছিলাম। তিনি বললেন, রেলের জায়গা। ছাড়তে হবে। আমার কিছু করার নাই শুধু রাশেদা খাতুন না। ওই তালিকায় রয়েছে শাহিন, আবুল হোসেন, আরজু, মেহেরুন খাতুন, তাসলিমা, রিপন, মুজিদ, সেলিমসহ শতাধিক পরিবার। তাঁরা বলছেন, আমরা সবাই গরিব মানুষ। দিন আনি, দিন খাই। আমরা দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছি।

এত অল্প সময়ের মধ্যে ঘর ভেঙে ছেলে-মেয়ে নিয়ে কোথায় যাব আর কী করব? এদিকে রেলের ওই জমি কিনে প্রতারিতও হয়েছেন অনেকে। তাঁদের একজন মেহেরুন খাতুন। তিনি বলেন, ‘‘আমি হোটেলে কাজ করে খাই। দীর্ঘদিন ভাড়ায় ছিলাম। জানতে পারি জমি পাওয়া যাচ্ছে রেলের জায়গায়। খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, ওই জমি পাল্লার আনোয়ার হোসেনের।

তিনি বলেন, ‘২০ হাজার টাকা দিলে ঘর জমি সব পাবেন। আমি সরল বিশ্বাসে ওই টাকা দিয়ে বসবাস শুরু করি।’ এখন রেল তাদের জায়গা ছেড়ে দিতে বলছে।’ ’ আনোয়ারা খাতুন নামে আরেকজন বলেন, ‘‘আমি ওসমানের বউয়ের কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা দিয়ে জমি কিনেছি। তিনি আমাকে বলেন, ‘৯৯ বছর তুমি বসত করতে পারবে।’

এখন ১০ বছর না হতেই আমাকে ছাড়তে হচ্ছে।’’ এ বিষয়ে রেলের পোড়াদহ অফিসের ফিল্ড কানুনগো শহিদুজ্জামান বলেন, ‘প্রকৌশলী অফিস রেলস্টেশনে বাউন্ডারি ওয়াল করবে। কারণ রেলের পাশের বস্তিগুলো থেকে পাথর নিক্ষেপ করে বাচ্চারা। এতে করে ক্ষতিগ্রস্ত হয় রেল, বিপদে পড়ে যাত্রীরা।’ তিনি বলেন, ‘উচ্ছেদের জন্য মাইকিং করা হয়েছে। তাঁদের বলা হয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব জায়গা খালি করে দিতে।

তাঁরা সরে গেলে রেলের ২০ একর জমি দখলমুক্ত হবে।’ যাঁরা অবৈধভাবে চাষবাদ করছেন, তাঁদের ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেবেন কি না-এমন প্রশ্নে শহিদুজ্জামান বলেন, ‘আইনের মধ্যে কেউ চাষাবাদ করলে বাধা নাই। তবে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হবে।’

 

 

কলমকথা/ বিথী